মাদারীপুরে আমন ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

মাদারীপুরে আমন ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি
রাকিব হাসান, মাদারীপুর।
মাদারীপুর জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরাতে, অনুকূল আবহাওয়া ও রোগ-বালাই না হওয়ায় কারনে আমনের ফলন এবার ভাল হয়েছে। তাছাড়া বাজারে ধানের দাম ভাল থাকায় এ বছর লাভবান হবেন অনেক কৃষকরা।
জেলা কৃষি প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা এস এম সালাউদ্দিন বলেন, এ বছর প্রতি হেক্টরে সাড়ে তিন টন চাল হিসেবে মাদারীপুরে ১৭ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে ৬১ হাজার ৮৮০ মেট্রিকটন চাল উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন কৃষি বিভাগ।
মাদারীপুরে আগাম জাতের আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। ফলে কৃষকদের মনে আনন্দ বিরাজ করছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সঠিক পরিচর্যার ফলে আশানুরূপ ফলন হয়েছে। এ জাতের ধানের ফলনে অন্য কৃষকরাও আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, জমিতে আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। গাছের শীষ ধানে নুইয়ে পড়ছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে। যদিও এরই মধ্যে কোন কোন এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে।
 মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, মাঠপর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা তদারকি করার জন্য  এবার আমন ধানে তেমন কোনো রোগবালাই হয়নি। তাই ফলন ভাল হয়েছে।
মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, জেলায় এবার রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ হাজার ৩১ হেক্টর। চাষ হয়েছে ১৭ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে।
কৃষকদের এ বছর সরকারি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন বীজ ও সার দেওয়ার কারণেও ফলন ভাল হয়েছে বলে মনে করেন কালকিনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস।
তিনি বলেন, কৃষকরা এ বছর ব্র্রি-৩৩, ৩৯, ৪৯, ৫১, ৫২, ৭৫, ৮৭ ও উন্নত জাতের বিনা-৭ চাষ করায় কাঙ্ক্ষিত ফলন ঘরে তুলতে পারছেন।
সদর উপজেলার ঝাউদি  ইউনিয়নের জামাল তালুকদার সাত বিঘা জমিতে উচ্চফলনশীল রোপা আমনের চাষ করেছেন।
তিনি বলেন, চাষাবাদে তার খরচ হয়েছে ২৫থেকে ৩০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় ২০ থেকে ২৫ মণ ধান উৎপাদন হয়েছে। গত দশ বছরের মধ্যে এবারই আমনের ধানের বাম্পার   ফলন হয়েছে।
“কয়েক বছর দাম কম থাকায় ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম। চলতি বছর এখনও ধানের দাম ভাল আছে।”
হোগলপাতিয়া  গ্রামের চাষী গিয়াসউদ্দীন বেপারী বলেন, চলতি বছর তিন বিঘা জমিতে লক্ষীদীর্ঘা ধান চাষ করেছেন।
তিনি বলেন, “এ বছরই প্রথম লক্ষীদীর্ঘা চাষ করেছি। খুব ভাল ফলন হয়েছে। এই ধান ওজনে কিছুটা কম হলেও দামের দিক দিয়ে পুষিয়ে যায়।”
হাটে এখন মোটা ধান প্রতিমণ গড়ে নয়শ টাকা আর চিকন গড়ে সাড়ে নয়শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান  উপজেলার  ফাসিয়াতলার হাটের ধান ব্যবসায়ী আক্তার বেপারী।
তিনি  আরো বলেন, “কৃষকেরা এখন আমন ধান ঘরে তুলছেন। নতুন ধানের দাম প্রতিদিনই ওঠানামা করে। আজ মোটা ধান প্রতি মণ গড়ে ৯০০ টাকা এবং চিকন ধান গড়ে সাড়ে নয়শ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে।”
আগামী সপ্তাহ থেকে হাটে নতুন ধান বেশি পাওয়া যাবে বলে জানান এই ব্যবসায়ী।
কালকিনি উপজেলার কালিগঞ্জের ধান ব্যবসায়ী লোকমান বলেন, “নতুন ধান কেবল উঠেছে। এখনও হাটে পুরোপুরি আসা শুরু করেনি। দুই-এক সপ্তাহের মধ্যে উঠতে শুরু করবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন